খন্দকার এইচ আর হাবিব : প্রাথমিক শিক্ষা পরীক্ষার জন্য ফি নেওয়া হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের দ্বায়বদ্ধতা তৈরী হতে পারে। যা তাদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগ দিতে উৎসাহিত করবে। শুধু তাই নয়, পরীক্ষার ফি প্রদানের ফলে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা প্রেরনা বোধ জাগ্রত হয়।
পূর্ব অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, পরীক্ষা কালীন সময়ে অভিভাবক গন উৎসব মুখর পরিবেশে সন্তানদের কে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে বিদ্যালয়ে পাঠাতো। ইতিপূর্বে যখন শিক্ষার্থীদের নিকট হতে পরীক্ষার ফি নেওয়া হতো তখন কার অভিভাবকদের চেতনাদ্বিপ্ত প্রেরনা শিক্ষক দের অনেক বেশি অনুপ্রানিত করতো।
সাম্প্রতিক বছর গুলোতে পরীক্ষার ফি না নেওয়ার কারণে অভিভাবকদের মধ্যে উৎসাহবোধ হারিয়ে গেছে, বিশেষ করে মা সমাবেশের মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণা কালীন সময়ে পূর্বের সময়ের চেয়ে ৪০% অভিভাবক উপস্থিত থাকতে চায় না। তাদের দৃষ্টিতে কিন্ডারগার্টেন স্কুলে যেহেতু ফি নেয়, তাই সত্যিকার অর্থেই তাদেরই পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। রবিঠাকুরের ভাষায় " না চাহিলে যারে পাওয়া যায় " ফি ছাড়া পরীক্ষা শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের দৃষ্টিতে অনুরূপ। অভিভাবক গন ফি প্রদানের জন্য অতি আগ্রহী, ফি না দেওয়ার মত অক্ষমতা বা দারিদ্র্যতা এখনকার দিনে আর নেই বরং অতি কষ্টে সঞ্চিত টাকা সন্তানের পড়াশোনার জন্য খরচ করতে পারাটাই আত্বসন্তুষ্টির জনক। পরীক্ষার ফি পরীক্ষার একটি জৌলুশ এটা ছাড়া পরীক্ষা পুর্নতা পায় না। ফি না নেওয়ার জন্য অনেক অভিভাবক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কে গরীবের স্কুল হিসেবে চিন্হিত করতে চায়।
তবে ফি নেওয়ার আগে নিশ্চিত করতে হবে যে, তা যেন কোন ভাবেই শিক্ষার্থীদের জন্য বোঝা হয়ে না দাঁড়ায়। ফি গ্রহনের ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা উচিৎ যাতে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো ইচ্ছে মত ফি আদায় করতে না পারে। সেই সঙ্গে সতর্ক হতে হবে ফি নেওয়ার ফলে শিক্ষার সুযোগ থেকে কোন শিশু যেন বঞ্চিত না হয়, ফি গ্রহনের প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ও যুক্তি সঙ্গত হয়। তবেই আবারো শিক্ষক, শিক্ষার্থী অভিভাবক নিজ নিজ দায়বদ্ধতা থেকে শিক্ষার সোনালী অতীত ফিরিয়ে এনে সত্যিকার অর্থে পরীক্ষা বান্ধব পরীক্ষা গ্রহন করা সম্ভব।